আমি পদ্মজা উপন্যাস PDF Download

তুমি সন্ধ্যা অলকানন্দা

By সাদাত হোসাইন

69 ratings

তুমি সন্ধ্যা অলকানন্দা বইটি সাদাত হোসাইন এর লেখা সমকালীন উপন্যাস। তুমি সন্ধ্যা অলকানন্দা বইটি ২০২৫ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছে। এটি প্রকাশ করেছে অন্যধারা প্রকাশনী।

রাত্রি বললো, ‘আপনাকে আমার কি মনে হয় জানেন?’ ‘কী?’ ‘দুঃখী হাস্যমুখী।’ ‘দুঃখী হাস্যমুখী?’ অবাক গলায় জিজ্ঞেস করল ধ্রুব। ‘হুম। এখন থেকে আমি আপনার নাম দিলাম দুঃখী হাস্যমুখী।’ শুনে আবারও হাসে ধ্রুব। তারপর বলে, ‘এই শব্দতো এর আগে কখনো শুনিনি! এর মানে কী?’

‘এই যে আপনি সারাক্ষণ হাসেন। দেখে মনে হয়, আপনার কোথাও কোনো দুঃখ নেই, বিষাদ নেই, একাকীত্ব নেই।...

‘তুমি সন্ধ্যা অলকানন্দা’কে আমি বলি আমার বুকের খুব কাছে থাকা এক উপন্যাস। এই উপন্যাস লিখতে গিয়ে কি নিজের অগোচরেই কোথাও আমি আমার নিজেকেই লিখে ফেলেছি? নিজের অনুভব, উপলব্ধি, ভাবনা? হয়তো। আবার হয়তো না। এই দ্বিধার কারণ, আমার চারপাশের মানুষ। যত ঝলমলে হাসিমুখের মানুষের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে, পরিচয় হয়েছে-দুদিন যেতে না যেতেই আবিষ্কার করেছি, তাদের বুকের ভেতর বিপুল বিষাদের অতল অন্ধকার। বরং ঝলমলে ওই হাসিমুখটুকু কেবলই রংমাখা এক ‘বিপুল বিভ্রমের বিলবোর্ড।’

ফলে, এই উপন্যাসে সম্পর্ক, প্রেম, একাকীত্ব, আশ্রয়, উপলব্ধি, জীবন ও যাপন, সংসার ও সংবেদনশীলতার অতল গহিন থেকে প্রবল যত্নে যে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অনুভূতি কিংবা চোরাগলি খুঁজে তাতে আলো ফেলার চেষ্টা করেছি, আতশি কাচের দৃষ্টিতে দেখার চেষ্টা করেছি, তা হয়তো হয়ে উঠেছে আর সব মানুষেরও হৃদয়ের গভীর গোপন দীর্ঘশ্বাস, অব্যক্ত অনুভূতির অনুবাদ। আমার বিশ্বাস, এই উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্রের গল্পেই পাঠক কোথাও না কোথাও খুঁজে পাবেন নিজেকে। আর তার মনে হবে, এই কথাটি তো আমারই। এই অনুভবটিও আমার। কিন্তু এভাবে তো কখনো ভেবে দেখিনি! বরং তা রয়ে গিয়েছিল এই জীবনের সবচেয়ে গোপন, গভীর, অব্যক্ত অনুভব হয়েই।

‘তুমি সন্ধ্যা অলকানন্দা’ তাই সেই সব অব্যক্ত গোপন অনুভূতির বাত্ময় প্রকাশ। হঠাৎ সরব হয়ে ওঠা নির্বাক সব অনুভূতির সবাক গল্প।

তুমি সন্ধ্যা অলকনন্দা বইয়ের কিছু অংশ

ধ্রুব যখন বাড়ি ফিরল তখন রাত দুটা। মীরা ঘুমিয়ে পড়েছে। সকালে অফিস আছে তার। অভ্রকে স্কুলেও দিতে হবে। অভ্রর বয়স পাঁচ। তার স্কুল আটটায়। অত ভোরে স্কুল মানে মীরাকে উঠতে হবে আরো আগে। সব গোছগাছ করে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে তারপর অফিস। ফিরতে ফিরতে রাত। তারপর আবার ঘরের নানান কাজ। রান্নার বুয়ার কাজ খুব একটা পছন্দ নয় তার। যদিও বাঁধা কাজের মেয়েও একজন আছে। নাম খোদেজা। মেয়েটা ভালো। নিজের পরিবারের মতোই সব দেখাশোনা করে। কাজকর্মে তেমন ফাঁকিঝুঁকিও নেই। কাপড় কাঁচা থেকে ঘর মোছা, অভ্রর দেখভাল থেকে শুরু করে মঝেমধ্যে বাজার সদায় করা-সবই করে সে। নাহলে একা হাতে এই সংসার সামলানো সম্ভব ছিল না। এখনো যে খুব সহজেই সব সম্ভব হচ্ছে তা নয়। তার পরও নিজের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করছে মীরা। এর কারণ ধ্রুব। সে শিল্পী মানুষ। গান গায়। খুব অল্প সময়েই খ্যাতির প্রায় মধ্যগগন ছুঁয়ে ফেলেছে। কিন্তু ভীষণ উদাসীন। কখন ঘুমায়, ওঠে, খায়-তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। এই স্বভাব তার চিরকালের। সংসারী মানুষ সে একদমই নয়। হয়তো সেকারণেই তার কাজের স্বাধীনতাটুকু দিতে চায় মীরা। আর ওই করতে গিয়েই দিশাহারা হতে হয় তাকে। দশদিক সামলাতে হয় একহাতে।

কিন্তু ধ্রুব আনমনা, উদাস। খুব সামান্য একটি কাজ করতে গিয়েও হাজারটা গোলমাল বাধাবে সে। মীরা ওই কথাটা এখনো ভুলতে পারে না। বছরতিনেক আগের ঘটনা। মীরার ছোটো বোন ইরা তখন শুধু ঢাকায় এসেছে। ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দেবে। তাকে পরীক্ষা শেষে আনতে যেতে হবে ধ্রুবকে। ইরা তখন ঢাকার পথঘাট কিছু চেনে না। অফিসে যাওয়ার সময় মীরা তাকে পরীক্ষকেন্দ্রে নামিয়ে দিয়ে গিয়েছিল। কথা ছিল ধ্রুব গিয়ে নিয়ে আসবে। তার কেন্দ্র পড়েছে আজিমপুরের কাছে। পরীক্ষা শেষে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করল ইরা। ধ্রুবকে অসংখ্যবার ফোন করল। কিন্তু ধ্রুব ফোন ধরল না। মীরাও না।

তুমি সন্ধ্যা অলকানন্দা PDF বইয়ের রিভিউ

সাদাত হোসাইন যখন লিখেন, মনে হয়—কথারা কাগজে পড়ে না, বরং হৃদয়ে পড়ে। “তুমি সন্ধ্যা অলকানন্দা” ঠিক তেমন এক গল্প, যা আমরা একেকজন হয়তো নিজের জীবনের কোনো এক বাঁকে অনুভব করেছি, কিন্তু কখনো শব্দে প্রকাশ করতে পারিনি। এই বইয়ের প্রতিটা লাইন যেন সন্ধ্যার রঙে রাঙানো। অলকানন্দা শুধু কোনো চরিত্র না, সে যেন এক মনের নাম, এক অনুভবের রূপ। সে এক নারী, যার ভিতর জোয়ার-ভাটার মতো ভালোবাসা, অভিমান আর অপেক্ষা খেলে যায়। আর ঠিক সেইখানে, পাঠক হিসেবে আমরা সবাই একবার না একবার দাঁড়িয়ে থেকেছি—কারো জন্য, কোনো স্মৃতির জন্য, কোনো অলিখিত প্রতিশ্রুতির জন্য। লেখকের ভাষা এখানে কাব্যের মতো মসৃণ, আবার বাস্তব জীবনের মতো সহজ।

সংলাপগুলো এমনভাবে লেখা, যেন কেউ আপনাকে ধীরে ধীরে জীবনের গোপন কথাগুলো বলে যাচ্ছে—চুপিচুপি, কানে কানে। এই উপন্যাসের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো তার আবহ। পড়তে পড়তে মনে হয়, আপনি এক নদীর পাড়ে বসে আছেন, সন্ধ্যা নামছে, বাতাসে ভেসে আসছে কোনো পুরনো গানের সুর, আর পাশে বসে থাকা অলকানন্দা একটার পর একটা গল্প বলছে। শেষের দিকে এসে যখন সব গুলিয়ে যায়—ভালোবাসা, ব্যথা, প্রাপ্তি, অপূর্ণতা—তখনই আপনি বুঝবেন, এই বইটা আপনাকে শুধু গল্প শোনায়নি, আপনাকে তার অংশ বানিয়ে নিয়েছে।

তুমি সন্ধ্যা অলকানন্দা উপন্যাস পিডিএফ ডাউনলোড

সাদাত হোসাইন এর লেখা অন্যধারা প্রকাশনী কর্তৃক প্রকাশিত তুমি সন্ধ্যা অলকানন্দা উপন্যাস PDF বইটির পিডিএফ এখান থেকে ডাউনলোড করা যাবে। You can now Tumi Sondha Alokananda PDF Download here.


নোটঃ কপিরাইটের কারণে তুমি সন্ধ্যা অলকানন্দা উপন্যাস PDF ডাউনলোড নাও হতে পারে। সাময়িক এই সমস্যার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

Availability

available

Publisher Name

Format

হার্ডকভার

Country

বাংলাদেশ

Language

বাংলা

Average Ratings

69 ratings

Submit Your Review You are not allowed to submit a review. Please Log In

Back to top button