ব্যাংকব্যবস্থা ও টাকার গোপন রহস্য বইটি মোহাইমিন পাটোয়ারীর লেখা ব্যাংকিং ও ফিন্যান্স বিষয়ক বই। বইটি বইমেলা ২০২২ এ প্রকাশিত হয়। ব্যাংকব্যবস্থা ও টাকার গোপন রহস্য বইটি প্রকাশ করেছে ঐতিহ্য প্রকাশনী।
Title | ব্যাংকব্যবস্থা ও টাকার গোপন রহস্য |
Author | মোহাইমিন পাটোয়ারী |
Publisher | ঐতিহ্য |
Edition | 1st Edition, 2022 |
Number of Pages | 160 |
Country | Bangladesh |
Language | বাংলা |
Price | View Price |
বইয়ের নামঃ ব্যাংকব্যবস্থা ও টাকার গোপন রহস্য
লেখকঃ মোহাইমিন পাটোয়ারী
দীর্ঘ দশ বছর দেশে-বিদেশে অধ্যয়ন শেষে মােহাইমিন পাটোয়ারী বর্তমানে অর্থনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন। ২০১৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে বিবিএ সম্পন্ন করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘চার্টার্ড ফাইনান্সিয়াল এনালিস্ট প্রােগ্রামে যুক্ত হন। অর্থনীতি এবং ফাইনান্সের পাশাপাশি গণিতের প্রতি রয়েছে তাঁর ঝোঁক। সিএফএ অধ্যয়নরত অবস্থায় দ্বিতীয় স্নাতক প্রােগ্রামের জন্য তিনি গণিত বিভাগে নাম লেখান উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ২০১৬ সালে স্নাতকোত্তর গণিত অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের সেরা দশে অবস্থানের পুরস্কার অর্জন করেন।
পড়াশােনার পাশাপাশি খেলাধুলা, ভ্ৰমণ, শিক্ষকতা এবং ভাষা শিক্ষার জগতেও তিনি একজন সক্রিয় ব্যক্তিত্ব। ২০১৮ সালে চাইনিজ ব্রিজ কম্পিটিশনে জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় স্থানসহ খেলাধুলার জগতেও রয়েছে তাঁর একাধিক পুরস্কার। বর্তমানে অর্থনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং বাংলা ভাষায় অর্থনীতির জগতকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। বই লেখার পাশাপাশি সংবাদপত্রেও তিনি নিয়মিত কলাম লিখেন। সরল বাংলায় এবং গল্পের ভঙ্গিমায় তাঁর লেখাগুলাে ইতােমধ্যেই পাঠকদের মন কেড়ে নিয়েছে।
ব্যাংকব্যবস্থা ও টাকার গোপন রহস্য বইয়ের কিছু অংশ
আপনি কখনো ভেবে দেখেছেন কি, সুদ এবং ব্যবসার মধ্যে পার্থক্য কী? টাকা উৎপন্ন হয় কীভাবে? কাগুজে টাকার মাঝে মূল্যমান প্রবেশ করে কেন? অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়ে যাচ্ছে কেন? এই প্রশ্নগুলো হয়তো আমার মতো আপনাকেও তাড়া করে বেড়িয়েছে এবং এগুলোর উত্তর হয়তো বা আংশিক পেয়েছেন কিংবা কোনো উত্তরই খুঁজে পাননি। আপনি উপরের যে দলভুক্তই হয়ে থাকুন না কেন, কোনো চিন্তা করবেন না, কারণ এই বইয়ে আমরা সবগুলো প্রশ্নের উত্তর বিস্তারিত জানবো। আর আমাদের এই জানার যাত্রা খুব সাধারণ একটি প্রশ্ন দিয়ে শুরু করি, ‘সুদ এবং ব্যবসার মধ্যে পার্থক্য কী?’
প্রথমত, এই প্রশ্নটি সাদা চোখে খুব সরল কিংবা অযৌক্তিক মনে হতে পারে। অথবা মনে হতে পারে, এমন প্রশ্ন করারই বা কী প্রয়োজন ছিল? তবে প্রকৃতপক্ষে প্রশ্নটি মোটেও সরল কিংবা অযৌক্তিক নয়। চিন্তা করে দেখুন- সুদের সাথে ব্যবসার তুলনা করতে গিয়ে প্রথমে যেই পয়েন্টটি উঠে আসে তা হচ্ছে ‘সুদে কোন ঝুঁকি নেই’। কিন্তু এই কথাটি সম্পূর্ণ ‘সঠিক’ নয়। কারণ ঋণদাতা সর্বাত্মক চেষ্টা করেও শতভাগ ঝুঁকিবিহীন পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে না। একজন গ্রাহক ঋণ নেবার পরে দেউলিয়া হতে পারে, অর্থ আত্মসাৎ করে পালিয়ে যেতে পারে কিংবা সম্পদশূন্য অবস্থায় মৃত্যুবরণ করতে পারে। এগুলো সবই মহাজনের জন্য ভয়াবহ ক্ষতির কারণ। তাই, ‘সুদে কোন ঝুঁকি নেই’ কথাটি সম্পূর্ণ সত্য না। সুদে ধার দিলে ঋণদাতারও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সুযোগ আছে।
সুদের ব্যাপারে দ্বিতীয় যেই পয়েন্টটি আমাদের সামনে আসে তা হচ্ছে, বস্তুগত পণ্যের (যেমন-ঘর বাড়ির) ক্ষয় (depreciation) আছে। একটি বাড়ি ধীরে ধীরে পুরানো হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমনকি একসময় ভেঙে পড়ে যায়।
তেমনি করে একটি গাড়ি কিংবা একটি কারখানাও একসময় অচল হয়ে যায়। সেই তুলনায় টাকার কোন ক্ষয় নেই। কিন্তু খেয়াল করুন, সম্পদের যেমন ক্ষয় আছে, তেমনি টাকারও মূল্যমানের ক্ষয় আছে। এই বছর যেই বস্তুটির মূল্য ১০০ টাকা, ১০ বছর পরে তার মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে হয়ে যাবে ২০০ টাকা। এমনকি একসময় হয়তো ১০০ টাকার নোটও অচল হয়ে যাবে। এমনটি হবার কারণ কী? কারণ হচ্ছে, টাকার মূল্যমানের ক্ষয়। অর্থাৎ, ব্যবসায় ক্ষয় আছে কিন্তু সুদে কোন ক্ষয় নেই, এই কথাটিও ভুল।
সুদ নিয়ে অপর যেই অভিযোগটি উঠে, তা হলো একজন সুদি মহাজন গ্রাহকের থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় করে থাকে। গ্রাহক লাভ করেছে নাকি লোকসান করেছে, তা তিনি বিবেচনা করেন না। সকল পরিস্থিতিতেই কেবল নিজের লাভ বুঝেন
এই কথাগুলো সত্য, তবে একই বাস্তবতা ব্যবসার ক্ষেত্রেও লক্ষ্য করা যায়। একজন বিপণি বিতানের মালিকও তার দোকান ভাড়া নেওয়া ব্যবসায়ীর অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করেন না। ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ীর ব্যবসায় লাভ হোক কি লোকসান, মাস শেষে তিনি এক প্রকার জোরপূর্বক ভাড়া আদায় করে থাকেন। তাই একমাত্র সুদি মহাজন টাকা আদায়ের ব্যাপারে কঠোর, কিন্তু ব্যবসায়ী নয়, এই কথাটিও সঠিক নয়।
সুদের সাথে ব্যবসার পার্থক্য আলোচনা করতে গিয়ে চতুর্থ যেই বিষয়টি উঠে আসে তা হচ্ছে, ব্যবসার পরিচর্যা ব্যয় আছে। যেমন- একটি বাড়ি মেরামত করা, রং করা কিংবা অন্য কোন সমস্যা হলে ঠিকঠাক করাই হলো বাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয়। অন্যান্য সম্পদের বেলায়ও অনুরূপ দেখাশোনা করতে হয়। যেমন একটি গাড়ি কিনে ভাড়া দিলে গাড়ির মেরামত করতে হয়, একটি বাগান ভাড়া দিলে বাগানের দেখাশুনা করতে হয় ইত্যাদি। কিন্তু টাকার বেলায় এরূপ কোন পরিচর্যা খরচ নেই।
এই দাবিটিও ‘পুরোপুরি’ সঠিক নয়। টাকার সরাসরি পরিচর্যা খরচ না থাকলেও এর নিরাপত্তা প্রদান, কর্মচারিদের বেতন, অফিস ভাড়া, কারেন্ট বিল ইত্যাদি বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। আবার একজন গ্রাহক দেউলিয়া হয়ে গেলে, সেই ক্ষতির ভারটাও মহাজন বা ব্যাংককেই বহন করতে হয়। এই সব কিছুই সুদভিত্তিক ঋণের পরিচর্যা খরচ। তাই সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ আছে কিন্তু ঋণের বেলায় কোন ব্যয় নেই, তা যুক্তির ধোপে টিকবে না।
Banksbebostha O Takar Gopon Rohosho বইয়ের রিভিউ
ব্যাংক, টাকা,মুদ্রা ব্যবস্থা এই বিষয়গুলো আমাদের জীবনের চলার পথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। আমরা এসবে জড়িয়ে থাকলেও ভেতরের মূল রহস্য ক’জন জানি! আর এই না জানার জন্য চারপাশে দেখবেন কেউ দেউলিয়া হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, ঋণের বোঝা টানতে টানতে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। সেই ঋণ পরিশোধ করতে আবার ব্যাংকের নিকট গিয়ে সুদে ঋণ নিয়ে পূর্বের ঋণ পরিশোধ করছে। এভাবেই চলছে আর দিনশেষে মাথা চাপড়ানো ছাড়া উপায় নেই।
আপনার যদি এসব বিষয়ে জানার ইচ্ছা থাকে এবং অর্থনীতির প্রচলিত ব্যাংক ব্যবস্থা, মুদ্রা ব্যবস্থা পরিবর্তন করার এবং সমাজে এর ইতিবাচক প্রভাব ফেলার চেতনা থাকে তাহলে মোহাইমিন পাটোয়ারীর ‘Banksbebostha O Takar Gopon Rohosho’ বইটি পড়ুন। লেখক খুবই সাবলীল ভাষায় এবং গল্পে গল্পে বইটি রচনা করেছেন। আপনার অর্থনীতি সম্পর্কে পূর্বে কোন ধারণা না থাকলেও চলবে। আমার মনে হয় বইটি প্রথবার পড়ে এরপর আবার পড়া উচিত। তাহলে মূল বিষয়গুলো ক্লিয়ার হয়ে যাবে। প্রচলিত ব্যবস্থাগুলোর পরিবর্তনে আমাদের সবাইকে একসাথে এগিয়ে যেতে হবে। তাই আপনি নিজে পড়ে চারপাশে মিলিয়ে নিন, চিন্তা করুন এবং আপনার পরিবার, বন্ধু ও আত্মীয়দের মাঝে ছড়িয়ে দিন।
যে যাই বলুক না কেন, আমার মতে ব্যাংকব্যবস্থা ও টাকার গোপন রহস্য বইটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বই। আমি নিজে বইটি পড়েছি আবার অনেকের কমেন্টও পরেছি। অনেকে বলেছেন যে বইটিতে সুদকে হালাল দেখানো হয়েছে। আসলে বিষয়টি এমন নয় বিষয়টি হচ্ছে সারা বিশ্বে বা বিশ্বের ধনী দেশগুলি কিভাবে এত ধনী এবং সমৃদ্ধশালী হয়েছে সেটা বোঝানো হয়েছে। আসলে অধিকাংশ মানুষই কোন কোন না ভাবে সুদের সাথে জড়িত। হয় সে কোন না কোন ভাবে নিচ্ছে, না হয় কোন না কোন প্রকিৃয়ার মধ্য দিয়ে দিচ্ছে। হতে পারে প্রতক্ষ্য বা পরক্ষ ভাবে। আসলে বইটিতে বর্তমানে প্রেক্ষটের আলোকে নীবির পর্যবেক্ষণ করে বিশ্বের ধনী দেশ ও অধিকাংশ ধনী ব্যক্তির গোপন রহস্য তুলে ধরেছেন। বৈশিক এই অর্থনীতির নতুন পরিমন্ডল ঘুরতে ও বুঝতে বইটি একাবার হলেও সত্যন্বেষী মানুষেদের পড়া উচিৎ। আর অর্থনীতির ছাত্র হলে তো কথাই নেই। সত্য ঘটনার আলোকে অর্থনৈতিক রূপরেখা যেভা্বে লেখক তুলে ধরেছেন তা সত্যিই বিরল। এমন একটি বইয়ের জন্য আমার পক্ষ থেকে লেখক ভাইকে ধন্যবাদ।
ব্যাংকব্যবস্থা ও টাকার গোপন রহস্য পিডিএফ ডাউনলোড
মোহাইমিন পাটোয়ারী এর লেখা ঐতিহ্য পাবলিকেশন্স প্রকাশিত ব্যাংকব্যবস্থা ও টাকার গোপন রহস্য বইটির পিডিএফ এখান থেকে ডাউনলোড করা যাবে। You can now Banksbebostha O Takar Gopon Rohosho PDF Download here.