
শৈলচূড়ায় চাঁদের হাসি
By ইলমা বেহরোজ
‘শৈলচূড়ায় চাঁদের হাসি’একটি হৃদয়স্পর্শী প্রেমকাহিনি। এটি পদ্মজা বইয়ের লেখিকা ইলমা বেহরোজে এর লেখা নতুন বই।
‘শৈলচূড়ায় চাঁদের হাসি’ এমন একটি উপন্যাস, যেখানে রয়েছে গভীর প্রেমের উষ্ণতা, দেশপ্রেমের উদাত্ত আহ্বান, এবং নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করার অদম্য আকাক্সক্ষা। এই উপন্যাসের প্রতিটি পাতায় ছড়িয়ে আছে গভীর আবেগের স্পন্দন, যা পাঠককে ভাবিয়ে তুলবে প্রেমের নিগূঢ় অর্থ ও ভাগ্যের অমোঘ লিখন নিয়ে।
প্রথম ভালোবাসা কী সত্যিই মুছে ফেলা যায় জীবনের পাতা থেকে? নাকি তা থেকে যায় হৃদয়ের অতল গভীরে, যেমন সমুদ্রের গর্ভে...
নিকিতার প্রথম প্রেম ছিল বসন্তের প্রথম কুঁড়ির মতো কচি, কোমল, আর অপরূপ সৌরভে ভরা। সেই নবীন অনুভূতি তার হৃদয়ে জাগিয়েছিল এক অপার্থিব শিহরণ, যেন কোকিলের প্রথম কুহুতান বা ভোরের আলোর প্রথম স্পর্শ। কিন্তু জীবনের নিষ্ঠুর বাস্তবতা সেই কোমল অনুভূতিকে নির্মমভাবে ছিন্নভিন্ন করে দিল। ক্ষত-বিক্ষত হৃদয় নিয়ে নিকিতা পালিয়ে গেল, যেভাবে একটি আহত পাখি তার ভাঙা বাসা ছেড়ে উড়ে যায় অজানার উদ্দেশে।
সময়ের অমোঘ প্রবাহে নিকিতা ফিরে এল। এবার একজন আত্মবিশ্বাসী, তেজস্বী নারী হিসেবে। তার চোখে এখন দৃঢ় সংকল্পের আগুন, ঠোঁটে অদম্য সাহসের হাসি। সে এখন শুধু নিজেকেই ভালোবাসে, যেন একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ পর্বতশৃঙ্গ।
শৈলচূড়ায় চাঁদের হাসি বইয়ের কিছু অংশ
সকালের আলো তখনো পুরোপুরি ফোটেনি। শহরের বুকে শীতের মৃদু কুয়াশা ছড়িয়ে আছে। নিকিতার রুমে ঘড়ির টিকটিক শব্দ তার হৃৎস্পন্দনের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে বাজছিল। আজ জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন, স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব। তার চোখে-মুখে উত্তেজনার ছাপ। স্কুল ব্যাগ গুছিয়ে নেওয়া, জামাকাপড় পরা-সবকিছুতে একটা তাড়া।
‘মা, আমি রেডি!’ চিৎকার করে বলল নিকিতা। তার এই তাড়াহুড়োর মধ্যেই একটা অঘটন ঘটল। দরজার কোণে জোরে কনুই ঠুকে গেল। ‘উঃ!’ যন্ত্রণায় কেঁপে উঠল সে।
মা তখন রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলেন। ‘কতবার বলেছি তোকে, এমন করে ছোটাছুটি করবি না। দেখ, কী হলো!’
নিকিতার চোখে জল এসে গেল, গেল, তবে। তবে সে তা দেখতে দিল না। সময় যে অপেক্ষা করবে না। দশটার আগে স্কুলে পৌছাতে হবে। তাই মায়ের আদর-যত্ন এড়িয়ে সে বেরিয়ে পড়ল।
বাইরের পরিবেশ ছিল একেবারে আলাদা। শীতের সকালে রাস্তায় লোকজনের ভিড়। কেউ অফিসে যাচ্ছেন, কেউ সকালে হাঁটতে বেরিয়েছেন। সবার গায়ে রঙিন সোয়েটার, মাফলার। শীতের হাওয়া ছুরির মতো কাটছে। নিকিতার নাকের ডগা লাল হয়ে উঠল ঠান্ডায়।
দ্রুত পা চালিয়ে হাঁটতে থাকল সে। ধীরে ধীরে তার শরীর গরম হয়ে উঠল। কপাল বেয়ে গড়াতে লাগল ঘাম। ওই তো, স্কুলের গেট দেখা যাচ্ছে।
নিকিতা একটু থামল। সাদা রঙের স্কার্ফ দিয়ে প্রথমে কপালের ঘাম মুছে নিল। তারপর এগিয়ে চলল মাঠের দিকে।
শীতের কুয়াশা ক্রমশ পাতলা হয়ে আসছে। সকালের সোনালি রোদ মাঠের ঘাসে ঝিকমিক করছে। প্রতিযোগিতার উত্তেজনায় মুখর স্কুলপ্রাঙ্গণ। ছাত্র- ছাত্রীদের উচ্ছ্বসিত কণ্ঠস্বর হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। শিক্ষকরা ব্যস্ত চূড়ান্ত প্রস্তুতিতে। সকালের বাতাসে মিশে আছে উৎসবের আমেজ।
নিকিতা মাঠের এক কোণে নিঃসঙ্গ দ্বীপের মতো গিয়ে বসল। তার চোখের দৃষ্টি স্থির, মন চঞ্চল। সে প্রতিযোগী নয়। তার জগৎ বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ।
শৈলচূড়ায় চাঁদের হাসি পিডিএফ ডাউনলোড
ইলমা বেহরোজ এর লেখা অন্যধারা পাবলিকেশন কর্তৃক প্রকাশিত শৈলচূড়ায় চাঁদের হাসি PDF বইটির পিডিএফ এখান থেকে ডাউনলোড করা যাবে। You can now Soilochuray Chader Hasi PDF Download here.